গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের দায়িত্বে থাকা সাবেক কর্মকর্তা ও বর্তমান জেলা সিভিল সার্জন ডা. মো. মামুনুর রহমানের সেচ্ছাচারীতায় স্টোর রোমে লাখ লাখ টাকার সরকারি ঔষধ মেয়াদ উত্তীর্ণ ও উই পোকা খেয়ে ফেলার নিউজ প্রকাশের পর টনক নড়ে উঠে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়টির।
বিষয়টি খতিয়ে দেখতে তাৎক্ষনিক তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয় এবং ৭ কর্ম দিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিলো।
বিষয়টি তদন্তে গাজীপুর সমন্বিত কার্যালয় দুদক টিমের সদস্যরাও এসেছেন এবং তারাও সরকারি ঔষধ নষ্ট হওয়ার ঘটনার প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া গেছে তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
গতকাল রোববার দুপুরে উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্টোর রোমে লাখা লাখ টাকার সরকারি ঔষধ মেয়াদ উত্তীর্ণ ও অন্যান্য উপকরণ উইপোকা খেয়ে নষ্ট হওয়ার ঘটনায় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক গঠিত তিন সদস্যের তদন্ত কমিটির সদস্যরা সকালেই কাপাসিয়া সরকারি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এসেছেন এবং অভিযোগের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। সেই সাথে অভিযুক্ত কর্মকর্তা মামুনুর রহমানকেও তাদের সাথে দেখা গেছে।
গাজীপুর সমন্বিত কার্যালয় দুদকের সহকারী পরিচালক মো: সেলিম মিয়া বলেন, কাপাসিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ওষুধ কান্ডের বিষয়ে আমরা সত্যতা পেয়েছি। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র হাসপাতাল কতৃপক্ষের কাছে চাওয়া হয়েছে। প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে পূর্বে যিনি দায়িত্ব পালন করেন তার গাফিলতি রয়েছে। আমরা তদন্ত পূর্বক রিপোর্ট ঊর্ধ্বতনও কর্তৃপক্ষের কাছে জমা দিব।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক গঠিত তদন্ত কমিটির সদস্যরা হলেন, ডিজি হেলথের উপজেলা হেলথ কেয়ার বিভাগের উপপরিচালক ডা. আজিজ, ঢাকা বিভাগের উপপরিচালক ডা. হারুনর রশীদ এবং ঢাকা বিভাগের সহকারী পরিচালক (প্রশাসন) ডা. জমির মো: হাসিবুস সাত্তার।
সরেজমিন জানাগেছে, সাবেক উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মামুুনুর রহমানের অব্যবস্থাপনায় রোগীদের জন্য সরকারি বরাদ্দের ঔষধ ও অন্যান্য সরঞ্জাম তালাবদ্ধ স্টোর রোমে ২০২৩ সালেই মেয়াদ উত্তীর্ণ হয় এবং বেশির ভাগ ঔষধই উইপোকা খেয়ে ফেলেছে।
হাসপাতাল সূত্র থেকে একজন জানান, সেবা নিতে আসা রোগীদের প্রয়োজনীয় ঔষধ না দিয়ে বাহিরে বিক্রির উদ্দেশ্য স্টোর রোমে ঔষধ গুলো মজুদ রাখা হতো। পরবর্তীতে ঔষধ গুলো সরাতে পারেনি অভিযুক্ত কর্মকর্তা।
বিউটি নামে একজন জানান, বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা নিতে আসেন নিম্নবিত্ত রোগীরা। পর্যাপ্ত ঔষধ থাকা সত্ত্বেও বাহির থেকে ঔষধ কিনে আনতে হয়। এছাড়া পেটে ব্যাথা ও একাধিক সিজারিয়ান রোগীর স্বজনরা জানিয়েছেন নিয়ম অনুযায়ী সম্পূর্ণ ফি চিকিৎসা সেবা দেওয়ার কথা থাকলেও বাহির থেকে ঔষধ কিনে আনতে হয়েছে তাদের।
মতামত দিন