উত্তরা পশ্চিম থানার সন্ত্রাসবিরোধ আইনের মামলায় সিনিয়র সাংবাদিক আনিস আলমগীরকে আদালতের কাঠগড়ায় তোলা হয়েছে। এ সময় কাঠগড়ায় তাকে অঝোরে কাঁদতে দেখা গেছে।
সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা ৫টা ২৮ মিনিটের তাকে আদালতের হাজতখানা থেকে এজলাসে তোলা হয়। পরে আনিস আলমগীরকে সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করে পুলিশ।
এর আগে আদালতে নেওয়ার সময় প্রচণ্ডরকম ভিড় দেখা যায়। এ সময় আনিসের হাতে হাতকড়া, মাথায় হেলমেট ও বুকে বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট পরা ছিল। এরপর ৫টা ৩২ মিনিটে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জশিতা ইসলামের আদালতের কাঠগড়ায় তোলা হয়। কাঠগড়ায় হাজিরের পর তার পক্ষের আইনজীবীরা তাকে ঘিরে ধরেন। কয়েকজনের সঙ্গেও কথা বলেন আনিস আলমগীর, এরপর অঝোরে কাঁদতে থাকেন। বারবার হাত দিয়ে চোখের পানি মোছেন তিনি। বর্তমানে তার মামলার রিমান্ড শুনানি চলছে।
এর আগে সন্ধ্যা ৫টা ৮ মিনিটের দিকে সাদা মাইক্রো গাড়িতে করে ডিবি অফিস থেকে আদালতে হাজির করা হয়। এরপর তাকে হাজতখানায় রাখা হয়। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উত্তরা পশ্চিম থানার ইন্সপেক্টর মুনিরুজ্জামান ৭ দিনের রিমান্ড আবেদন করেছেন। উত্তরা পশ্চিম থানার প্রসিকিউশন বিভাগ সূত্র থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
এর আগে সাংবাদিক আনিস আলমগীর, অভিনেত্রী মেহের আফরোজ শাওনসহ মোট চারজনের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে উত্তরা পশ্চিম থানায় দায়ের হওয়া অভিযোগটি মামলা হিসেবে নথিভুক্ত হয়েছে। এই মামলায় ডিবি হেফাজতে থাকা সাংবাদিক আনিস আলমগীরকে আনুষ্ঠানিকভাবে গ্রেফতার দেখানো হয়।
ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) শফিকুল ইসলাম সংবাদমাধ্যমকে এই তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, ‘উত্তরা পশ্চিম থানায় সাংবাদিক আনিস আলমগীর, অভিনেত্রী মেহের আফরোজ শাওনসহ চারজনের বিরুদ্ধে একটি মামলা হয়েছে। ওই মামলায় ডিবি হেফাজতে থাকা সাংবাদিক আনিস আলমগীরকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।’
তিনি আরও জানান, মামলাটির তদন্তকারী কর্মকর্তা থানা পুলিশ থেকে আসছেন। তদন্তকারী থানা পুলিশের মাধ্যমেই গ্রেফতার সাংবাদিক আনিস আলমগীরকে আজ আদালতে সোপর্দ করা হবে।
এর আগে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রোববার সন্ধ্যায় আনিস আলমগীরকে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়।
ডিএমপির গণমাধ্যম বিভাগের উপকমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান রাত সোয়া ৮টায় তাকে ডিবি কার্যালয়ে নেয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
মামলার অভিযোগ থেকে জানা গেছে, ২০২৪ সালের জুলাই মাসে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পালিয়ে গেলেও তার অনুসারীরা বিভিন্ন কৌশলে ঘাপটি মেরে দেশে অবস্থান করে দেশকে অস্থিতিশীল ও অবকাঠামোকে ধ্বংস করার লক্ষ্যে রাষ্ট্রবিরোধী অপরাধ সংঘটনের ষড়যন্ত্র করে আসছে। আসামিরা ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের পর থেকে সোশ্যাল মিডিয়াসহ বিভিন্ন টেলিভিশনের টকশোতে বসে নিষিদ্ধ সংগঠনকে ফিরিয়ে আনার গুজব (প্রপাগান্ডা) চালিয়ে আসছে।
এর মাধ্যমে তারা আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসনের পাঁয়তারা করছে। এসব বিভিন্ন পোস্টের ফলে নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগ ও যুবলীগের কর্মীরা অনুপ্রাণিত হয়ে রাষ্ট্রকে অস্থিতিশীল ও অবকাঠামোকে ধ্বংস করার লক্ষ্যে রাষ্ট্রবিরোধী অপরাধ সংঘটনের ষড়যন্ত্র ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করছেন।
মতামত দিন