• ২০২৫ Jun ১৭, মঙ্গলবার, ১৪৩২ আষাঢ় ৩
  • সর্বশেষ আপডেট : ০২:০৬ অপরাহ্ন
English
পরিচালনাপর্ষদ
আমাদের সাথে থাকুন আপনি ও ... www.timebanglanews.com

রিয়েল হিরো কাস্তিলো অনুপ্রেরণার উৎকৃষ্ট উদাহরণ

  • প্রকাশিত ০২:০৬ অপরাহ্ন মঙ্গলবার, Jun ১৭, ২০২৫
রিয়েল হিরো কাস্তিলো অনুপ্রেরণার উৎকৃষ্ট উদাহরণ
ছবিঃ সংগৃহীত
রিপোর্টার, অলোক

কাস্তিলো মাটি ও মানুষের নেতা। ল্যাটিন আমেরিকার রাজনীতিতে নতুন ইতিহাস। একসময় টয়লেটও পরিষ্কার করতেন পেরুর নতুন প্রেসিডেন্ট। কখনো জমিদারের জুতা পরিষ্কার, কখনো অন্যের জমিও চষে দেন। ১৪০ কিলোমিটার পথ হেঁটে যেতেন আমাজনের কফি বাগানে কাজ করতে। পড়ানোর পাশাপাশি পরিষ্কার করতেন পুরো স্কুল।

এখনো তিনি ভালোবাসেন মাটিকে। ভালোবাসেন কৃষিনির্ভর জীবিকা ও এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট মানুষগুলোকে। নিজেই হালচাষে নেমে পড়েন নিজের জমিতে, কখনো অন্যের জমিও চষে দেন। দেশের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পরও খেত-খামারি-চাষে একটুও অহংকার পড়েনি তার মনে। শুধু পেরু নয়, বিশ্বজুড়েই তিনি এখন পরিচিত মাটি ও মানুষের নেতা হিসাবে। তিনি আর কেউ নন, জীবনসংগ্রামে বিজয়ী এক লড়াকু সৈনিক পেদ্রো কাস্তিলো। এবার তিনি জয়ী হয়েছেন পেরুর প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে।

বিবিসি জানিয়েছে, ভোটে তুমুল লড়াইয়ে জেতার কয়েক সপ্তাহ পর ১৯ জুলাই তার জয়ী হওয়ার ঘোষণা এলো। বুধবার শপথ নেবেন ৫১ বছর বয়সি এই সাবেক শিক্ষক ও ইউনিয়ন নেতা। গার্ডিয়ান। রাজনীতিতে কাস্তিলো নতুন মুখ। ফ্রি পেরু পার্টির হয়ে জয়ী হলেন তিনি। দারিদ্র্যের কষাঘাতে তিলে তিলে বড়ো হওয়া এই প্রেসিডেন্ট দুর্নীতি আর দারিদ্র্য নিরসন করে সমৃদ্ধ করবেন দেশটির অর্থনীতিকে-এমনই প্রত্যাশা দেশটির সাধারণ মানুষের।

তার জন্মই হয়েছিল দরিদ্র কৃষক পরিবারে। বাবা-মা দুজনই ছিলেন নিরক্ষর। নয় ভাইবোনের মধ্যে তিনি তৃতীয়। দক্ষিণ আমেরিকার বৃহত্তম সোনার খনি অঞ্চল কাজামারকাকে বলা হয় অধিকাংশ দরিদ্র অধ্যুষিত এলাকা। ছোটবেলা থেকেই জীবনসংগ্রামে অভ্যস্ত কাস্তিলো। স্থানীয় এক বিখ্যাত জমিদারের জমি চাষ করতেন তার পরিবার। সেখানে জমিদারের জুতা পরিষ্কার থেকে শুরু করে যাবতীয় কাজ করতে হতো তাকেও। পড়াশোনাও চালিয়ে গিয়েছিলেন তিনি। প্রতিদিন ট্রাকে চড়ে স্কুলে আসা-যাওয়া করতেন তিনি। পড়াশোনার খরচ জোগাতে ওই তরুণ বয়সেই অমানুষিক পরিশ্রম করতে হয় তাকে। বাবার সঙ্গে ১৪০ কিলোমিটার পথ হেঁটে যেতেন আমাজন অঞ্চলের কফি বাগানে কাজ করতে।

সেখানে কিছুসময় আইসক্রিমও বিক্রি করতেন তিনি। সপ্তাহে তিন দিন এই কাজ করতে হতো তাকে। অনেক কাঠখড় পুড়িয়ে সিজার ভাললেজো বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মনোবিজ্ঞানে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন তিনি।

তখন থেকেই সমাজসেবার ব্রত ছিল তার ভেতর। রাস্তা তৈরি, অসুস্থ মানুষকে সেবা দেওয়া, অর্থ দিয়ে সহযোগিতা করা ইত্যাদি বামপন্থি চিন্তায় ও মননে নিজের জীবনকে সাজিয়েছেন কাস্তিলো। একসময় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক হিসাবে চাকরি নিয়েছিলেন তিনি। সেখানে শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা করানোর পাশাপাশি ক্লাসরুমে রান্না করা, স্কুল পরিষ্কার করা যাবতীয় কাজ তিনি একাই করেছেন। শেষমেশ ওই স্কুলের অধ্যক্ষও হয়েছিলেন তিনি। এজন্য পেরুর শিক্ষকমহলে দারুণভাবে জনপ্রিয় ছিলেন তিনি। একসময় সহযোগীরা তাকে অধিকার আদায়ের নেতা হিসাবে মানতে শুরু করেন। মূলত তার নেতৃত্ব দেওয়ার রাজনীতি ওখান থেকেই শুরু হয়। তিনি বলেন,‘ উচ্চ বিদ্যালয়ের পড়া শেষ করা আমার জন্য ছিল দুর্দান্ত সাফল্যের বিষয়। দরজায় দরজায় ঘুরে আমি সংবাদপত্রও বিক্রি করেছিলাম সেসময়ে। হোটেলগুলোতে টয়লেটও পরিষ্কার করতে হয়েছে আমাকে। সেসময় আমি প্রত্যক্ষভাবে উপলব্ধি করেছি শ্রমিকদের কঠোর পরিশ্রমের বাস্তবতা।’

সর্বশেষ